পেকুয়ায় প্রেমিক-প্রেমিকাকে আটক করেছে স্থানীয়রা। পরে তাদেরকে স্থানীয় ইউপি কার্যালয়ে সোপর্দ করে। চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া উপজেলার ৬ষ্ট শ্রেনীর এক ছাত্রীর সাথে প্রেমে জড়িয়ে যান পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের এক যুবক। মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করার সুবাধে ওস্তাদের সাথে দীর্ঘ দিন ধরে চুপিসরে প্রেম নিবেদন করে ওই ছাত্রী। অতপর সম্পর্কের বাস্তব ইতি টানতে প্রেমিক জুটি সিদ্ধান্ত নেন বিয়ের। এর সুত্র ধরে তারা দু’জন গোপনে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ব হয়েছেন। পরিবারের অমত থাকায় ওই ছাত্রী প্রস্তাব দেয় তার প্রেমিককে অন্যত্রে গিয়ে বিয়ে সারতে। এরই প্রেক্ষিতে তারা দু’জন গোপনে পালিয়ে গিয়ে আকদ সম্পন্ন করে। এদিকে প্রেমিক বিয়ে উপযুক্ত হলেও প্রেমিকা কিশোরী। সবেমাত্র ৬ষ্ট শ্রেনীর অধ্যায়নরত ছাত্রী। কিন্তু প্রেম মানেনা বয়স ও জাতকুল। কিশোরী বয়সে মেয়েটি স্বামী ও বিয়ের জন্য অত্যন্ত আবেগ প্রবন হয়ে পড়ে। বিয়ের দাবিতে ছুটে আসেন প্রেমিকের গ্রামের বাড়ি উজানটিয়াতে। ছটফট করছে মেয়েটি তার জীবন সঙ্গিকে পেতে। চোখের জ্বল ও কাান্নয় ব্যথিত করে প্রত্যক্ষদর্শীদের। প্রেমিক জুটির আটকের চাঞ্চল্যকর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকার শতশত নারী-পুরুষ ছুটে যান উজানটিয়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে। জানাগেছে পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের মিয়াপাড়া এলাকার মৃত.ছিদ্দীক আহমদের ছেলে হাফেজ সাইফুল কাদের (২৪) চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া উপজেলার পুটিবিলা ইউনিয়নে দীর্ঘদিন ধরে অবস্থান করে। এ ইউনিয়নের গৌড়স্থান হামযার বাপের পাহাড় জামে মসজিদ ও হেফজখানায় চাকুরী করেন ওই যুবক। চাকুরির সুবাধে সম্পর্কে জড়িয়ে যান একই এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য ছাবের আহমদের কিশোরী কন্যা নাসরিন সোলতানা তাসমিনের সাথে। তাসমিন গৌড়স্থান আকতারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসার ৬ষ্ট শ্রেনীর ছাত্রী। হাফেজ সাইফুল কুকিল কন্ঠের অধিকারী। মসজিদে আযানের কন্ঠে অভিভুত হন ওই ছাত্রী। এরপর শিক্ষকের সাথে সম্পর্ক করতে প্রস্তাব দেয় ওই ছাত্রী। তার প্রস্তাবে সম্মতি দেন ওস্তাদ সাইফুল কাদের। দীর্ঘ ছয় মাস প্রেম করার পর গত দু’মাস আগে তারা দু’জন আকদ সম্পন্ন করেছে। গত এক সপ্তাহ আগে প্রেমিক জুটি পালিয়ে যান পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে। এর আগে তারা একই ভাবে রাজধানী ঢাকাতে অবস্থান নেয়। এদিকে মেয়ের খোঁজে অস্থির তার পরিবার। তার সন্ধ্যানে ছুটে আসেন ছেলের গ্রামের বাড়িতে। তারা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম চৌধুরীর শরনাপন্ন হন। চেয়ারম্যান ছেলের পরিবারকে নির্দেশ দেন প্রেমিক জুটিকে হাজির করতে। এর প্রেক্ষিতে গত ২০সেপ্টম্বর মঙ্গলবার সকালে প্রেমিক জুটিকে হাজির করা হয় পরিষদে। এনিয়ে মেয়ের অভিভাবক ও ছেলের অভিভাবকদের নিয়ে পরিষদ কার্যালয়ে বৈঠক হয়। এ সময় মেয়েকে ফিরিয়ে দিতে নির্দেশ দেন শালিসি বৈঠকে। এদিকে এ সংবাদ জানার পর মেয়েটি চরম বিপাকে পড়েন। অঝুর নয়নে কান্নায় এক সময় জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন মেয়েটি। এরপর চেয়ারম্যানকে পায়ে ধরে বলেন আপনি আমার বাপ। আমাকে বাচান। আমি ফিরে যাবনা। আমার স্বামীর কাছে যাব। সে অন্যায় করেনি। আমি তাকে নিয়ে আসতে বলেছি। আমি শাশুর বাড়িতে যাব। আমাকে ফিরিয়ে দিলে আতœহত্যা করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য ছিদ্দীক আহমদ ও সাইফুল ইসলাম জানায় মেয়েটির কান্নায় চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি। আসলে বিয়ে না হলে মেয়েটি ঝুঁকির মধ্যে থাকবে। ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম জানায় আমার করার কিছু ছিলনা। মেয়েটির বয়স কম। এরপরেও তারা সম্মত হলে একটি চেষ্টা থাকত।
################
পেকুয়ায় ইউএনএফপি এর সহায়তায় মায়ের কোল ফেল শিশুটি
পেকুয়া প্রতিনিধি ::::
পেকুয়ায় চৌদ্দ মাস বয়সের এক শিশুকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। স্ত্রীর সাথে বনিবনা না হওয়ায় মাতাল স্বামী মায়ের বুক থেকে রাতে গোপনে নিয়ে যায় শিশুটিকে। এ সময় মা তার গর্ভের ধন শিশুটিকে ফিরিয়ে পেতে আইনি সহায়তার জন্য ছুটে যান ইউএনএফপি এর প্রকল্প কর্মকর্তাদের কাছে। তারা দ্রুত ছুটে যান থানা পুলিশের কাছে। অতপর পুলিশ তাৎক্ষনিক শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য তড়িৎ ব্যবস্থা নেন। এমনকি স্বামীর বাড়ি থেকে ওই শিশুটিকে উদ্ধার করে ফিরিয়ে দেন মায়ের কোলে। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের চইরভাঙ্গা এলাকায়। ওই শিশুর নাম নুর মোহাম্মদ বাবু। জানা গেছে বারবাকিয়া ইউনিয়নের কাদিমাকাটা এলাকার আহমদ ছফার মেয়ে শারমিন আকতার এর সাথে দু’বছর আগে বিয়ে হয় সদর ইউনিয়নের চইরভাঙ্গা এলাকার নুরুল আলমের ছেলে আবু বক্করের। সম্প্রতি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যৌতুক নিয়ে বনিবনা চলছিল। শারমিন আকতার জানায় স্বামী একজন যৌতুক লোভী ও নেশাখোর। প্রায় সময় যৌতুকের জন্য নির্যাতনসহ মারধর করে। আমি ২০দিন ধরে বাপের বাড়িতে অবস্থান করছি। গত ১৮ সেপ্টম্বর স্বামী আমার বাপের বাড়িতে আসেন। রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় আমার বাবুকে নিয়ে যায়। এনজিও’র সংস্থার দু’আপা আমাকে বাচ্চা উদ্ধার করতে সাহায্য করেছে। ইউএনএফপি এর পেকুয়ার প্রতিনিধি রুনা আকতার, ইউনিয়ন ফেসিলেটর আমাতুর রহিম হিরা জানায় মেয়েটির দুরাবস্থা দেখে আমরা ছুটে এসেছি। পুলিশ আমাদেরকে এ কাজে নিরলস সহযোগিতা করেছে। আমরা আসলে মানুষ নিয়ে কাজ করি। পেকুয়া থানার এসআই সুমন জানায় শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। আসলে দুধের একজন শিশুকে এ ভাবে নিয়ে যাওয়া অমানবিক। শিশুকে মায়ের বুকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। কক্সবাজার জেলা নারী সংস্থার প্রকল্প পরিচালক রাফিয়া আকতার জানায় আমরা বিষয়টি জানার পর উদ্ধারের জন্য কাজ করেছি। পুলিশ ও আমাদের প্রতিনিধিদের আন্তরিক সহযোগিতায় শিশুটিকে উদ্ধার করতে পেরেছি।
################
পেকুয়ায় দুদুকের মামলায় সাব-রেজিষ্ট্রার গ্রেফতার
পেকুয়া প্রতিনিধি :::
পেকুয়ায় উপজেলা অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রাপ্ত সাব-রেজিষ্ট্রার পরিতোষ কুমার দাশ (৫০)কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শিক্ষা সনদ জালিয়াতির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন ( দুদুক) তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় গতকাল বুধবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ এর সাব-রেজিষ্ট্রার কার্যালয় থেকে তাকে গ্রেফতার করে পেকুয়া থানা পুলিশ। ওইদিন বিকেলে তাকে চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করে। গ্রেফতারকৃত পরিতোষ কুমার দাশ রাজধানী ঢাকার সুত্রাপুর থানার টিকাটুলি হাটখোলা রোডস্থ ৩৫নং অফিসার্স ভবনের বাসিন্দা ইন্দ্র ভোষন দাশের ছেলে। তিনি চকরিয়া উপজেলার সাব-রেজিষ্ট্রার এর পাশাপাশি পেকুয়ার অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রাপ্ত সাব-রেজিষ্ট্রার। পুলিশ ও দুদুক সুত্র জানা গেছে পরিতোষ কুমার দাশের বিরুদ্ধে শিক্ষা সনদ জালিয়াতির অভিযোগে গত বুধবার (২১সেপ্টম্বর) ঢাকার শাহবাগ থানায় একটি মামলা হয়। যার নং-১৯/১৬। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদুক) চট্টগ্রাম-১এর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারি পরিচালক আহমদ ফরহাদ বাদি হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন। ওই মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। দুদুকের ওই কর্মকর্তা জানায় পরিতোষ কুমার দাশ এইচএসসি পাশ। কিন্তু তিনি এমএসসির সনদ জালিয়াতি করে ওই পদে নিয়োগ পান। যা গুরুতর অপরাধ। ওই পদে থেকে তিনি রাষ্ট্রের ১১লাখ ১২হাজার ৬শত ৩৬টাকা আতœসাত করেন। জানা গেছে গত বছরের ১৯আগষ্ট পেকুয়ার অতিরিক্ত সাব-রেজিষ্ট্রার হিসেবে পরিতোষ কুমার দাশ যোগদান করেন। এর আগে তিনি চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়া সাব-রেজিষ্টার অফিসে ওই পদে কর্মরত ছিলেন। জানা গেছে তিনি ১৯৮৫সালের ২৭মে সরকারি চাকুরিতে নিয়োগ মনোনীত হন। ২০০৯সালের ৯ সেপ্টম্বর পদন্নোতি পান। নিবদ্ধকের মহাপরিদপ্তরে সাব-রেজিষ্ট্রার হিসেবে যোগদান করেন তিনি। তার পিতা ইন্দ্র ভোষন দাশ মুজিব নগর অস্থায়ী সরকারের কর্মচারী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার কোটালী পাড়ায়। মুক্তিযুদ্ধা কোটায় এরশাদ সরকার সে সময় পরিতোষ কুমার দাশকে চাকুরিতে নিয়োগ দেন।
###################
পেকুয়ায় প্রতিপক্ষের হামলায় স্কুল ছাত্রসহ আহত-২
পেকুয়া প্রতিনিধি ::::
পেকুয়ায় প্রতিপক্ষের হামলায় ৬ষ্ট শ্রেনীর স্কুল ছাত্রসহ দু’জন গুরুতর আহত হয়েছে। আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে পেকুয়া হাসপাতালে ভর্তি করে। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বুধবার বিকেল ৪টায় উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের লালজান পাড়া এলাকায়। আহতরা হলেন ওই এলাকার আব্দুল করিমের ছেলে মো.আরমান (১৪) ও স্ত্রী রেহেনা বেগম (৪০)। এদের মধ্যে আরমানকে ওইদিন সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতার (চমেকে) রেফার করা হয়েছে। স্থানীয় সুত্রেজানা গেছে বসতভিটার জায়গা নিয়ে দু’সহোদর সৌদি প্রবাসি নুরুল কাদের ও আব্দুল করিমের মধ্যে বিরোধ চলছিল। ওইদিন বিকেলে নুরুল কাদেরের ছেলে সৌদি প্রবাসি আলমগীর জোর করে বিরোধীয় জায়গায় সিমানা প্রাচীর তৈরির কাজ করে। এ সময় বাধা প্রদান করেন আব্দুল করিমের স্ত্রী রেহেনা বেগম। এনিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এর সুত্র ধরে আরমান স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে আলমগীর, মৃত.শামসুল আলমের ছেলে নাছির উদ্দিন, মোসলেন উদ্দিন ও রুহুল আমিনের ছেলে ইদ্রিসসহ ৫-৭জনের দুর্বৃত্ত লাঠি দিয়ে বেদড়ক পিটিয়ে আহত করে। এ সময় মা রেহেনা বেগম উদ্ধার করতে এগিয়ে আসলে তাকেও মারধর করে আহত করে।
পাঠকের মতামত: